পাবনা প্রতিনিধি
পাবনায় জমি লিখে না দেয়ায় বাবা মা ও ভাইকে নির্মমভাবে মারধর করা সেই ছেলে শিমুল শেখকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টার দিকে পাবনার ভাঁড়ারা ইউনিয়নের শ্রীপুর গ্রাম থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এর আগে বাবা মা ও ভাইকে মারধরের ঘটনায় সম্প্রতি কালের কণ্ঠ সহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। এরপর তাকে গ্রেফতার করা হয়।
এব্যাপারে পাবনা র্যাবের কোম্পানি কমান্ডার এনামুল হক বলেন, জমি লিখে না দেয়ায় মারধরে বাবা মায়ের হাত ভেঙে ফেলে। মারধরের শিকার ছোটভাইও মৃত্যুপথযাত্রী। এঘটনায় বাবা মা প্রাণ ভয়ে দীর্ঘদিন বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বলে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। বিষয়টি নজরে আসার পর থেকেই আমরা তাকে গ্রেফতার চেষ্টা অব্যাহত রাখি। পলাতক থাকাবস্থায় সোমবার তার পাশের গ্রাম শ্রীপুরের একটি দোকান থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাকে পাবনা সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় কয়েক বছর আগে তিন বিঘা জমি বিক্রি করে ভাঁড়ারা ইউনিয়নের নলদহ নতুনপাড়ার শিমুলকে বিদেশ পাঠান বাবা নাছির। কিন্তু বাবার আশার গুঁড়ে বালি ঢেলে টাকা নষ্ট করে দেশে ফিরে মাদক ও জুয়ার অন্ধকার জগতে জড়িয়ে পড়ে শিমুল। এরপর প্রতিনিয়ত বাবা ভাই বোনের কাছে টাকা দাবি করতে থাকে। না দিলেই বাবা মাকে মারপিট পরিণত হয় নিত্য দিনের ঘটনায়। সম্প্রতি টাকা ও জমিজমা তার নামে লিখে দিতে বলে শিমুল। নাছির শেখ সেটি না দেয়ায় সবশেষ গত ১৪ সেপ্টেম্বর রড, হাতুড়ি ও চাপাতি দিয়ে পিটিয়ে ও কুপিয়ে বাবা মাকে নির্মম নির্যাতন করে। এরপর রক্তাক্ত অবস্থায় বাড়ি থেকে বের করে ফেলে দেয় রাস্তায়। হত্যা হুমকি দেয়ায় এখন আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে পলাতক জীবন কাটছে হতভাগা বাবা মায়ের। প্রবাসী ছোট ছেলে রিপন এসব ঘটনার প্রতিবাদ জানালে পরদিন বিকেলে সহযোগী জামাল শেখ, আরিফ শেখ, শিউলি বেগম ও আজিম শেখকে সাথে নিয়ে রিপনকেও লোহার রড, হাতুরি, জিআই পাইপ ও চাপাতি দিয়ে পিটিয়ে ও কুপিয়ে গুরুত্বর আহত করে শিমুল। কিন্তু এতোসব ঘটনার পরও সহযোগী একজনকে গ্রেফতার করলেও মুলহোতা শিমুল ও অন্য সহযোগীরা ছিলেন ধরাছোয়ার বাইরে। সম্প্রতি এ নিয়ে কালের কণ্ঠ সহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। সবশেষ র্যাব শিমুলকে গ্রেফতার করে।