চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি
পাবনার চাটমোহরে এক গৃহবধূকে যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন করে আটকে রাখা হয় মর্মে অভিযোগ পাওয়া গেছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আহতাবস্থায় ওই গ্রহবধূকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে গত রবিবার (২৪ আগস্ট) রাত ১০টার দিকে উপজেলার ফৈলজানা ইউনিয়নের মেঘারপাড়া গ্রামে। আহত গৃহবধূ মেঘারপাড়া গ্রামের আঃ কুদ্দুসের ছেলে সেনাবাহিনীর সদস্য সবুজ হোসেনের স্ত্রী ও উপজেলার পাশর্^ডাঙ্গা ইউনিয়নের বনগ্রামের আঃ রশিদের মেয়ে তানিয়া খাতুন (২৩)। তানিয়া বর্তমানে চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধিন আছেন।
অভিযোগে জানা গেছে,প্রায় ৪ বছর আগে মোটা টাকার যৌতুকের বিনিময়ে সবুজ হোসেনের সাথে বিয়ে হয় তানিয়া খাতুনের। বিয়ের কিছুদিন পরেই সবুজ হোসেন শ^শুরের কাছে মোটরসাইকেল দাবি করেন। কিন্তু শ^শুর আঃ রশিদ তা দিতে াপারগতা প্রকাশ করলে তানিয়ার উপর নেমে আসে নির্যাতন। এক পর্যায়ে ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে সবুজ ও তার মা-বাবা। এনিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে বিরোধ শুরু হয়। ইতোপূর্বে নির্যাতন করে বাড়ি থেকে তানিয়াকে বের করে দেয়া হয়। পরে সেনাবাহিনীর কাছে অভিযোগ করা হলে তানিয়াকে ফেরত নেওয়া হয়। কিন্তু তানিয়াকে নির্যাতন করা বন্ধ হয়নি। গত রবিবার সামান্য ঘটনায় তানিয়াকে ঘরে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে তানিয়া বাবা ও ভাই ঘটনাস্থলে গিয়ে খবর দেন পাশের শরৎগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়িতে। ফাঁড়ির এসআই আবুল কালাম আজাদ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে এসে তানিয়াকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। এ ব্যাপারে গতকাল সোমবার (২৫ আগস্ট) সকালে তানিয়ার পিতা আঃ রশিদ চাটমোহর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। তানিয়ার মামা আঃ মজিদ অভিযোগ করেন বিয়ের পর থেকেই তানিয়াকে যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন শুরু করে। প্রথমে মোটরসাইকেল চায়,পরে ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে সবুজ ও তার মা-বাবা। এই টাকা না দেওয়ার কারণেই আমার ভাগ্নিকে মারপিট করে হত্যার চেষ্টা করে। আমরা এর ন্যায় বিচার চাইছি। তবে নির্যাতন বা যৌতুক দাবির বিষয়টি অস্বীকার করেছেন তানিয়ার স্বামী সবুজ ও শ^াশুড়ি।
এ বিষয়ে তানিয়ার শ^শুর আঃ কুদ্দুসের সাথে কথা বলার জন্য যোগাযোগ করা হলে তিনি মোবাইল ফোন রিসিভ না করলেও তানিয়ার শ^াশুড়ি সুর্য় খাতুন ফোন রিসিভ করে বলেন,‘তানিয়াকে কোন প্রকার নির্যাতন করা হয়নি। বরং তানিয়াই আমাকে আঘাত করেছে। তানিয়ার বাবা ও ভাই এসে ইনজেকশনের সিরিঞ্জ দিয়ে তানিয়ার মাথায় আঁচড় দিয়ে রক্ত বের করে মিথ্যে অভিযোগ সাজিয়েছেন।’ তানিয়ার শ^াশুড়ি দাবি করেন,আশপাশের লোকজন সবই জানেন। আমরা কখনই আমার ছেলের বউ তানিয়াকে নির্যাতন করিনি। এ অভিযোগই মিথ্যে। আমাদের ফাঁসানোর জন্যই এটা করা হয়েছে।
তানিয়ার স্বামী সবুজ হোসেন জানান,তার মা-বাবার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তা সত্য নয়,এলাকার লোকজনের কাছে জানলেই সত্য বেরিয়ে আসবে।
চাটমোহর থানার অফিসার ইনচার্জ মনজুরুল আলম জানান,পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মেয়েটিকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। এ বিষয়ে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্তপূর্বক পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থাা নেওয়া হবে।