চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি
সারাদেশের মতো পাবনার চাটমোহর উপজেলার বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চলমান কর্মবিরতির কারণে শিক্ষা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে দাবি-দাওয়া বাস্তবায়নের দাবিতে শিক্ষক-কর্মচারীরা কর্মবিরতিতে থাকায় পাঠদান কার্যত বন্ধ হয়ে পড়েছে। এতে স্কুলে উপস্থিতি কমে গেছে এবং শিক্ষার্থীদের মাঝে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা ও শেখার ক্ষতি।
এদিকে কর্মবিরতির কারণে সবচেয়ে বেশি ভুগছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। পাঠদানের ধারাবাহিকতা ব্যাহত হওয়ায় অভিভাবকরাও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা চান, সরকার ও সংশ্লিষ্ট দফতর দ্রুত আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করুক, যাতে স্বাভাবিক ক্লাস পুনরায় শুরু হয়।
উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, তারা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছেন এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করছেন। যে কোনো সমঝোতার মাধ্যমে দ্রুত সংকট কাটিয়ে ওঠার আশাবাদও ব্যক্ত করেছেন।
সার্বিকভাবে কর্মবিরতির ফলে শিক্ষাব্যবস্থায় যে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে, তা দ্রুত সমাধান না হলে শিক্ষার্থীদের শেখার ক্ষতি দীর্ঘ মেয়াদে প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।
সরেজমিনে বুধবার( ৩ ডিসেম্বর) সকাল ১১ টার দিকে চাটমোহর পৌর সদরের শালিখা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়। ১ তারিখ থেকে শুরু হওয়া ৩ দিনের বার্ষিক পরীক্ষা নিচ্ছেন এক অভিভাবক। আর শিক্ষকেরা প্রধান শিক্ষকের কক্ষে অলস সময় পার করছেন।
তারা দীর্ঘদিন ধরে সময়মতো পদোন্নতি, বেতন বৈষম্য নিরসন, শিক্ষকদের পদপদবি পুনর্নির্ধারণসহ কয়েকটি মূল দাবি জানিয়ে আসছেন। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে আশ্বাস ছাড়া কোনো কার্যকর পদক্ষেপ না আসায় বাধ্য হয়েই তারা কর্মবিরতি পালন করছেন।
অভিভাবক কনা খাতুন জানান,শিক্ষকেরা পরিক্ষা না নিয়ে আমরা অভিভাবককেরা পরিক্ষা নিচ্ছি।আমার মনে হয় শিক্ষকদের দাবি মেনে নেওয়াই উচিত। তা না হলে এভাবে চলতে থাকলে আমাদের সন্তানেরা সিমাহীন ক্ষতির মুখে পরবে।
সহকারী শিক্ষক শিবা রানী সাহা বলেন, “আমরা আন্দোলন করতে চাই না। কিন্তু ন্যায্য অধিকার না পেলে আমাদের আর উপায় থাকে না। শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ আমাদের মতোই গুরুত্বপূর্ণ, তাই দ্রুত সমাধান চাই।আমাদের দাবি না মানলে আমদের এ কর্মবিরতি চলমান থাকবে।
সহকারী শিক্ষক নিশাত জাহান প্রিতি বলেন,এটা আমাদের যৌক্তিক দাবি। এ দাবি না মানলে দেশের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মতো কর্মবিরতি চলমান থাকবে।
এ ব্যাপারে শালিখা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লুৎফনন্নেছা খাতুন জানান, প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রণি পর্যন্ত আমাদের মোট ৩০৬ জন শিক্ষার্থী রয়েছে এবং তাদের বার্ষিক পরীক্ষা চলমান। আমি অভিভাবকদের সাথে নিয়ে পরীক্ষা কার্যক্রম চালানোর চেষ্টা করছি। কিন্তু সহকারি শিক্ষকগন ব্যতীত এরুপ শিক্ষাকার্যক্রম চালিয়ে নেয়া বেশ দুরুহ।