শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:৪২ পূর্বাহ্ন
নোটিশ :
আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে অভিনন্দন : আপনার এলাকার উন্নয়ন অনিয়ম, অপরাধ, শিক্ষা শিল্প- সংস্কৃতি , ইতিহাস- ঐহিত্য , অবহেলা-অবিচারসহ প্রয়োজনীয় সঠিক তথ্য টিত্র পাঠান। আমরা যাচাই-বাছাই করে তাহা গুরুত্বসহকারে প্রচার করব।  

তাড়াশে অধিকাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেই শহীদ মিনার

মোঃ ফরহাদ হোসেন তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি / ৪০৪ ২৩৫ বার পড়া হয়েছে :
প্রকাশের সময় : রবিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০২২

শহীদ মিনার ভাষা আন্দোলনের প্রতিচ্ছবি। মাতৃভাষার জন্য জীবন উৎসর্গের প্রতীক। মায়ের ভাষায় কথা বলার অধিকার প্রতিষ্ঠাতার সাহসী চেতনা। যেই শহীদ মিনার দেখলে বিনম্র শ্রদ্ধায় মন জাগ্রত হয়। গৌরবময় সেই ভাষা আন্দোলনের ৬৮ বছর পার হলেও এখনো সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলায় ৯১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নির্মিত হয়নি কোনো শহীদ মিনার। ফলে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসসহ বিভিন্ন জাতীয় দিবসে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে বিপাকে পড়তে হয় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় ১৩৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ৪৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার থাকলেও বাকি ৯১টিতে নেই। ফলে এসব বিদ্যালয়ে ২১ ফেব্রুয়ারি, ১৬ ডিসেম্বর ও ২৬ মার্চসহ অন্যান্য জাতীয় দিবস পালন করা হয় শুধু জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার প্রয়োজন। তাই উপজেলায় যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার এখনো নির্মাণ করা হয়নি, এ বছর সেই সব প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আরশেদুল ইসলাম বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরেও অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার না থাকা সত্যিই দুঃখজনক। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মুক্তিযুদ্ধ ও ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস জানতে এসব প্রতিষ্ঠানে সরকারিভাবে শহীদ মিনার নির্মাণ করা জরুরি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মেজবাউল করিম বলেন, প্রতিবছরই বার্ষিক উন্নয়ন তহবিল থেকে কিছু কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হচ্ছে। এ বছরও শহীদ মিনার নির্মাণ করা হবে। আর এভাবেই পর্যায়ক্রমে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণের কাজ সম্পূর্ণ করা হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামান মনি বলেন, সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হয়তো একসাথে শহীদ মিনার নির্মাণ করা সম্ভব নয়, তবে উপজেলা পরিষদ থেকে প্রতিবছর কিছু কিছু প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হচ্ছে। এভাবেই পর্যায়ক্রমে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হবে এমন পরিকল্পনাও রয়েছে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার না থাকা প্রসঙ্গে হামকুড়িয়া পশ্চিমপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ জহুরুল ইসলাম মোল্লা বলেন, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস এলে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে অস্থায়ীভাবে শহীদ মিনার বানিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি দেওয়া হয়। এছাড়াও ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা কলাগাছের শহীদ মিনার তৈরি করে সেখানে ফুল দিয়ে থাকেন। শিক্ষার্থীদের নিজ বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার না থাকায় বিভিন্ন বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা কয়েক কিলোমিটার দূর থেকে পায়ে হেটে গিয়ে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

উপজেলার মাগুড়া বিনোদ ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ নজরুল ইসলাম বাচ্চু বলেন, শিশুদের সামনে ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস তুলে ধরতে শহীদ মিনার প্রথম সিঁড়ি। আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকেসহ বায়ান্ন থেকে একাত্তরের আন্দোলন সংগ্রামের সঠিক ইতিহাস জানানোর ক্ষেত্রে শহীদ মিনার একটা গুরুত্বপূর্ণ চেতনার বাহক।

উল্লেখ্য, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গত ২৩ জানুয়ারি ২০২২ তারিখে অনুষ্ঠিত সমন্বয় সভায় সিদ্ধান্তে জানানো হয়েছে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণের ক্ষেত্রে বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ নষ্ট না করে বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণে উপযুক্ত দৃশ্যমান স্থানে শহীদ মিনার নির্মাণ করতে হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো সংবাদ